কাউসার লোকমান মামা লোকমান লোকমান মৃধা লোকমানপটুয়াখালী জেলাতে পাশা ট্রেনিং সেন্টারে আয়োজিত হল নিরাপদ পরিবেশে আসন্ন দূর্গাপূজা উদযাপনে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের সাথে গোলটেবিল বৈঠক ও মতবিনিময় সভা।
৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ, রোজ সোমবার, নিরাপদ পরিবেশে আসন্ন দূর্গাপূজা উদযাপনের জন্য ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর সহায়তায় এবং ইউকে-এর এফসিডিও-এর অর্থায়নে মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) এর উদ্যোগে সনাতন ধর্মালম্বী নেতৃবৃন্দের সাথে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, এমএএফ সদস্যরা, জেলা প্রশাসনের ২০২৪ নিধি, পটুয়াখালী জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, সনাতন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিবৃন্দ, যুব নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর কর্মকর্তাসহ আরো অনেকে।
উক্ত সভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে দূর্গাপূজার সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করে এমএএফ সদস্যরা। একই সাথে দায়িত্বশীল কতৃপক্ষকে এই বিষয়ে সার্বিক সহায়তা প্রদান ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায় এমএএফ।
এ সময় সকল বক্তারা সকলেই নিরাপদে শারদীয় দূর্গাৎসব উদযাপনের জন্য সকলের সহযোগিতার আহ্বান জনান ও যার যার জায়গা থেকে সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন৷ অনুষ্ঠানে এমএএফ-এর পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমএএফ সদস্য, সাবেক বারবার নির্বাচিত পৌর মেয়র মোশতাক আহমেদ পিনু।
তিনি বলেন, “আগে আমরা মিটিং করতাম কি করে পূজা আরো উৎসবমুখর পরিবেশে করা যায়৷ আর এখন মিটিং করি পূজার নিরাপত্তা নিয়ে। এর কারণ আমাদের খুঁজে বের করতে হবে৷” ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর ডেপুটি ডিরেক্টর দিপু হাফিজুর রহমান তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর কার্যক্রম ও লক্ষ্য সম্পর্কে সকলকে অবগত করেন এবং অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ব্যক্ত করেন।
অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয় মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার সাহিত্যের নানা উদাহরণ এনে বলেন, সনাতন ধর্মও আমাদের দেশের ঐতিহ্য। তিনি পারস্পরিক সম্মানের প্রতি জোড় দেন। তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা মন্দিরগুলোতে থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণতা বিবেচনায় মন্দিরের ক্যাটাগরী করে নিরাপত্তা প্রদান করা হচ্ছে। ৮ তারিখ থেকে এই নিরাপত্তা দ্বিগুণ করা হবে। ৮৩ টি মোবাইল টিম কাজ করবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি, তাই এত নিরাপত্তা। এর মানে এই নয় যে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আমাদের থেকে পৃথক।” মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার তার ব্যক্তিগত নম্বর প্রদান করেন উপস্থিত সকলের জন্য পূজা উৎসবে নিরাপত্তা অনুভবের লক্ষ্যে। তিনি পূজা আয়োজনে আর্থিক দুর্বলতার কথা প্রসঙ্গে অবগত করেন যে জেলা পরিষদ আর্থিক অনুদানের পরিকল্পনা করছে। এছাড়াও, সনাতন ধর্ম্বাবলম্বী ও পূজা উদযাপন কমিটির প্রতিনিধিদের তুলে ধরা বিভিন্ন প্রতিকূলতা সমাধানে আশ্বাস দেন অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট৷ যেমন, বিভিন্ন রাস্তায় কিছু অংশে লাইট না থাকা, একটি মন্দিরের সামনের জলাবদ্ধতা, নারীদের নিরাপত্তা ইত্যাদি।
পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি স্বপন ব্যানার্জি বলেন, “আমরা উৎসব করবো, কিন্তু উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। আমরা চাই, আমাদের এবারের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা যেন শতশত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারি। শুধু আমরাই না, আমাদের সাথে থাকবে মুসলমান, বৌদ্ধ ভাইয়েরা।”
পুলিশ উপপরিদর্শক, পটুয়াখালী জেলা সৈয়দ বাবুল আকতার পটুখালী পুলিশ-এর উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে আসন্ন দূর্গাপূজা উদযাপনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি হটলাইন নম্বর দেন কন্ট্রোল রুমের পটুয়াখালী জেলার জন্য। নম্বরটি হল: ০১৩২০১৫৫৫১১৩.
সমাপনী বক্তব্য রাখেন এমএএফ পটুয়াখালীর সাধারন সম্পাদক মো. মুজিবুর রহমান টোটন সকলকে এমএএফ পটুয়াখালীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য যে, এমএএফ পটুয়াখালী, পটুয়াখালী জেলার প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংগঠন, যেটি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে অ্যাডভোকেসি করে।